বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০১৪

ময়ূর এর লেজে এতো চোখের ন্যায় কারুকার্য কোথা হতে এলো?


         

গ্রীক মিথ অনুযায়ী, দেবতা ইনাকাস এর কন্যা ছিল রাজকন্যা আইও। দেবরাজ জিউস এর নারিলিপ্সা এর ব্যাপারটা যারা একটু আধটু মিথ পরেছেন তাদের কাছে অজানা কিছু না। মিথ ঘাঁটলেই অনেক নজির পাওয়া যায়। তো অনেকের মতো রাজকন্যা আইও এর ও প্রেমে পড়ে যান জিউস। প্রতি রাতে স্বপ্নে প্ররোচিত করতে থাকেন আইও কে। কিন্তু বাধা হিসেবে চলে আসেন জিউস এর স্ত্রী হেরা। হেরা ছিলেন প্রচণ্ড ঈর্ষাপরায়ণ। এ ব্যাপারে পড়ে কখনো বলা যাবে। তো হেরার চোখ এড়িয়ে আইও এর কাছে যাওয়ার বুদ্ধি করতে লাগেন দেবরাজ জিউস। একদিন জিউস পুরো পৃথিবীকে কালো মেঘে আচ্ছ্যন্ন করে চলে এলেন আইও’র কাছে। কিন্তু হেরা ও চতুর কম না। হঠাৎ পৃথিবীর প্রকৃতির এই পরিবর্তন এ সন্দেহ যাগে হেরার মনে। হেরা স্বর্গের কোথাও জিউস কে না পেয়ে নেমে আসেন পৃথিবীতে। হেরার হাতে ধরা খাওয়ার ভয়ে জিউস আইও কে বকনা বাছুর বানিয়ে দেন যাতে হেরা বুঝতে না পারে এটা আইও। কিন্তু হেরা ও কম যায় না। বুঝে ফেললো সব। জিউস কে বলল- “এই বকনা বাছুরটি খুব ই সুন্দর। তুমি কি এর কোনও অংশ আমাকে উপহার দেবে?”

বাধ্য হয়ে জিউস আইও কে হেরার হাতে তুলে দিলেন। এবার হেরা বকনা বাছুরটির পাহারার জন্য নিয়োগ দিলেন দেবতা আরগাস পানোপটেস কে যিনি ছিলেন হেরার প্রিয়ভাজন। আরগাস পানোপটেস এর ছিল একশত চোখ। আরগাস এর সবগুলো চোখ কখনো একসাথে ঘুমাতো না।

এবার জিউস বুদ্ধি করতে লাগলো কিভাবে আরগাস পানোপটেস এর হাত থেকে মুক্ত করা যায় আইও কে। তিনি শরণাপন্ন হলেন সুচতুর দেবতা হার্মিস এর। তিনি হার্মিস কে সব বুঝিয়ে বলার পর হার্মিস নেমে গেলেন আরগাস এর কবল থেকে আইও কে উদ্ধারের অভিযানে। হার্মিস রাখালের বেশে পৃথিবীতে এসে সুমধুর সুরে বাশি বাজাতে বাজাতে আরগাস এর কাছে গেলেন। হার্মিস এর বাশির সুরে আরগাস বিমহিত হয়ে হার্মিস কে কাছে ডাকেন। হার্মিস বাশিতে বিভিন্ন সুর শুনিয়ে আরগাস কে ঘুম পড়ানোর চেষ্টা করতে থাকেন কিন্তু আরগাস এর কোনও না কোনও চোখ খোলা থাকেই। এরপর হার্মিস, আরগাস কে দেবতাদের কাহিনি শোনাতে শুরু করলে আরগাস বিরক্ত হয়ে সবগুলো চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে। এই সুযোগ এ হার্মিস হত্যা করে আরগাস কে। এবং উদ্ধার করে নিয়ে আসেন আইও কে। তখন হেরা আরগাস এর চোখ গুলো নিয়ে তার প্রিয় পাখি ময়ূর এর লেজে লাগিয়ে দেন। আর এভাবেই ময়ূর এর লেজে এতো চোখের ন্যায় কারুকার্য।

বি.দ্রঃ এই আইও এর বংশধর হল আমাদের অতিপরিচিত হারকিউলিস।